গালিয়ানো, ইতিহাসবয়ান ও সৃষ্টিশীলতা
লাতিন আমেরিকার লড়াকু লেখক এদুয়ার্দো গালিয়ানোর একটা দুর্দান্ত বইয়ের কাছে বারবার ফিরে আসি। বইটার নাম Mirrors।
গালিয়ানো দুনিয়াব্যাপী মজলুম জনতার বা "জগতের লাঞ্ছিত-ভাগ্যাহত"দের (কথাটা ফ্রানজ ফানো'র পূর্বসূরী হিসাবে কাজী নজরুলকেই চিহ্নিত করে রাখে), এবং "তুচ্ছ" জিনিসের ইতিহাস লিখেছেন বইটাতে, তবে সনাতন ঐতিহাসিকদের মতো লেখেন নাই মোটেই।
খণ্ড খণ্ড ন্যারেটিভ্-এ গল্প-প্রবাদ-রুপকথা-মিথ-পরিসংখ্যান-ঐতিহাসিক ঘটনা এবং কবিতার পংক্তিকে একসঙ্গে জড়ো করে তাদের গালিয়ানো বুনে গেছেন এমনভাবে যে, ইতিহাসকে দারুণভাবে চিন্তা করা যায়, দেখা যায়, শোনা যায়, স্পর্শ করা যায়। এবং জর্মন মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ওয়ালটার বেনজামিনের মতো এভাবেও বলা যায় যে, ইতিহাস কেবল ধারাবাহিক বর্ণনার বিষয় নয়, বরং ইতিহাস-লিখনে ঝলকে ঝলকে ওঠে রৈখিকতা-ভাঙ্গা দীপ্তিময় মুহূর্তের ইমেজ--দ্বন্দ্ব ও টেনশানকে ধারণ করেই।
গালিয়ানো পড়তে গিয়ে আরেক লেখকের একটা বিশেষ কথা মনে পড়ে গিয়েছিলো--একেবারে ভিন্ন সময়ের ও ভিন্ন ভাষার এক লেখককে, আমাদের বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই, যিনি হাল আমলের সাবঅলটার্ন ইতিহাসতাত্ত্বিকদের আগেই এক অর্থে "জগতের লাঞ্ছিত-ভাগ্যাহত"দের ইতিহাস লেখার ডাক দিয়েছিলেন এই বলে, "আরও সূক্ষ্ম, আরও তুচ্ছ জিনিসের ইতিহাস চাই। আজকের তুচ্ছতা হাজার বছর পরের মহাসম্পদ। মানুষ মানুষের বুকের কথা শুনতে চায়"।
এই ডাকটারই যেন উত্তর দিয়েছেন গালিয়ানো তার ওই বইটাতে। একটা বিশেষ মেসেজও বেরিয়ে আসে এই বইটা থেকেঃ সৃষ্টিশীলতা কোনো গোষ্ঠির বাপদাদার সম্পত্তি নয়; কেবল কবি-আঁকিয়ে-সঙ্গীতকাররাই যে সৃষ্টিশীল হবেন তা তো নয়, তারা সৃষ্টিশীলতার উদাহরণ হতে পারেন তো বটেই, কিন্তু সৃষ্টিশীল হতে পারেন একজন কৃষক, একজন কারণিক, একজন লড়াকু মানুষ, একজন শিক্ষক, একজন শ্রমিক ইত্যাদি।
আসলে গালিয়ানো এটাই বোঝান যে, মানুষের অনুশীলনের সমগ্রেই সৃষ্টিশীলতা বিভিন্নভাবেই কাজ করতে পারে। আর এই সৃষ্টিশীলতা ছাড়া মুক্তির সংগ্রাম এগুতে পারে না।
গালিয়ানো দুনিয়াব্যাপী মজলুম জনতার বা "জগতের লাঞ্ছিত-ভাগ্যাহত"দের (কথাটা ফ্রানজ ফানো'র পূর্বসূরী হিসাবে কাজী নজরুলকেই চিহ্নিত করে রাখে), এবং "তুচ্ছ" জিনিসের ইতিহাস লিখেছেন বইটাতে, তবে সনাতন ঐতিহাসিকদের মতো লেখেন নাই মোটেই।
খণ্ড খণ্ড ন্যারেটিভ্-এ গল্প-প্রবাদ-রুপকথা-মিথ-পরিসংখ্যান-ঐতিহাসিক ঘটনা এবং কবিতার পংক্তিকে একসঙ্গে জড়ো করে তাদের গালিয়ানো বুনে গেছেন এমনভাবে যে, ইতিহাসকে দারুণভাবে চিন্তা করা যায়, দেখা যায়, শোনা যায়, স্পর্শ করা যায়। এবং জর্মন মার্কসবাদী তাত্ত্বিক ওয়ালটার বেনজামিনের মতো এভাবেও বলা যায় যে, ইতিহাস কেবল ধারাবাহিক বর্ণনার বিষয় নয়, বরং ইতিহাস-লিখনে ঝলকে ঝলকে ওঠে রৈখিকতা-ভাঙ্গা দীপ্তিময় মুহূর্তের ইমেজ--দ্বন্দ্ব ও টেনশানকে ধারণ করেই।
গালিয়ানো পড়তে গিয়ে আরেক লেখকের একটা বিশেষ কথা মনে পড়ে গিয়েছিলো--একেবারে ভিন্ন সময়ের ও ভিন্ন ভাষার এক লেখককে, আমাদের বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেই, যিনি হাল আমলের সাবঅলটার্ন ইতিহাসতাত্ত্বিকদের আগেই এক অর্থে "জগতের লাঞ্ছিত-ভাগ্যাহত"দের ইতিহাস লেখার ডাক দিয়েছিলেন এই বলে, "আরও সূক্ষ্ম, আরও তুচ্ছ জিনিসের ইতিহাস চাই। আজকের তুচ্ছতা হাজার বছর পরের মহাসম্পদ। মানুষ মানুষের বুকের কথা শুনতে চায়"।
এই ডাকটারই যেন উত্তর দিয়েছেন গালিয়ানো তার ওই বইটাতে। একটা বিশেষ মেসেজও বেরিয়ে আসে এই বইটা থেকেঃ সৃষ্টিশীলতা কোনো গোষ্ঠির বাপদাদার সম্পত্তি নয়; কেবল কবি-আঁকিয়ে-সঙ্গীতকাররাই যে সৃষ্টিশীল হবেন তা তো নয়, তারা সৃষ্টিশীলতার উদাহরণ হতে পারেন তো বটেই, কিন্তু সৃষ্টিশীল হতে পারেন একজন কৃষক, একজন কারণিক, একজন লড়াকু মানুষ, একজন শিক্ষক, একজন শ্রমিক ইত্যাদি।
আসলে গালিয়ানো এটাই বোঝান যে, মানুষের অনুশীলনের সমগ্রেই সৃষ্টিশীলতা বিভিন্নভাবেই কাজ করতে পারে। আর এই সৃষ্টিশীলতা ছাড়া মুক্তির সংগ্রাম এগুতে পারে না।
0 comments:
Note: Only a member of this blog may post a comment.