On Nazrul by Azfar Hussain
নজরুলের কাজের কিছু উপেক্ষিত--এবং তুলনামূলকভাবে উপেক্ষিত--দিক নিয়ে মোটা দাগে এবং সংক্ষেপে কয়েকটা কথা আবারও না বলে পারছি না।
প্রথমত, ভাবকে কোনোভাবেই ভারাক্রান্ত না করে কবিতায় কি করে রাজনৈতিক অর্থনীতির 'ট্রোপ' এবং পদ ও বর্গকে অনায়াসে জারি রাখা যায়, তা নজরুল দেখিয়ে গেছেন। "কুলিমজুর" এবং "কৃষাণের গান" কবিতায় এমনকি মার্কসের মূল্যতত্ত্বকে স্বচ্ছন্দে কবিতার ভাষায় অনুবাদ করেছেন নজরুল। তবে এইগুলো একমাত্র উদাহরণ না।
দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন অর্থে নজরুল 'জাতীয়' হলেও কম্যুনিস্ট বলেই (তত্ত্বের তত্ত্ববাগিশ 'কম্যুনিস্ট' না, সৃষ্টিশীলভাবেই কম্যুনিস্ট) তিনি দারুণভাবে আন্তর্জাতিকতাবাদী। আর তাঁর আন্তর্জাতিকতাবাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ--একমাত্র না হলেও--অংশ হচ্ছে তাঁর বিশ্বসাহিত্যভাবনা। নজরুল ওই তথাকথিত 'বিশ্বসাহিত্য'-এর আধিপত্যবাদী 'বিশ্ব'কে আগেভাগেই ঠিকঠাক চিনে নিয়েছিলেন। এদিক থেকেও তিনি 'তিরিশ'-এর ওইসব 'পণ্ডিত'-কবির চেয়েও আলাদা। এমনকি তিনি যে পোলিশ লেখকদেরও মনোযোগ দিয়ে পড়তেন, তার প্রমাণ মেলে তাঁর লেখা "বর্তমান বিশ্ব সাহিত্য" প্রবন্ধে, যে-প্রবন্ধ বর্তমান সময়ের তাগিদেই আমাদের পুনর্পাঠ দাবি করে বলে আমি মনে করি।
তৃতীয়ত, আরবি-ফার্সি সাহিত্যে নজরুলের যে কেবল অসাধারণ দখল ছিল তাই না। তিনি একাধিক আরবি-ফার্সি ছন্দকে বিস্ময়করভাবে এবং অনায়াসে বাংলা কবিতায় ব্যবহার করেছেন। ছন্দগুলো হচ্ছে-- 'মোতাকারিব', 'মোতদারিক', 'হজয, 'রজয', 'মাশাকেল' ইত্যাদি। এভাবে তিনি বাংলা কবিতার ছন্দের ইতিহাসে নজিরছাড়া ঘটনা ঘটিয়ে গেছেন।
এছাড়া নজরুলের কবিতায় এবং গানে 'গজল' ফর্মের সৃষ্টিশীল ব্যবহার নিয়ে তেমন কাজ হয় নাই। এই প্রসঙ্গে এও বলা দরকার, নজরুল যে কেবল আরবি-ফার্সি কবিতার--বিশেষ করে হাফিজ এবং খৈয়াম-এর কবিতার--সেরা অনুবাদ করেছেন তাই না; তিনি এমনকি কুরআন থেকেও অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর 'সুরা ফাতিহা' আর 'সুরা ইখলাস'-এর অনুবাদ একই সঙ্গে এতই বিশ্বস্ত এবং এতই সুন্দর যে, মনে হয় নামাজে দাঁড়িয়ে মূল আরবির বদলে তাঁর তর্জমায় সুরা পাঠ করলে নজরুলের ভাষায় "পরম সুন্দর" আল্লাহ বোধ হয় অখুশি হবেন না। আরেকটা কথাঃ কেউ কেউ হয়ত জানবেন যে, হজরত আলীর একটা বা দুটো সুফি কবিতাও নজরুল অনুবাদ করেছিলেন এক সময়।
চতুর্থত, এটাও ঠিক যে, নজরুল সংস্কৃত সাহিত্যও অধ্যয়ন করেছিলেন কিছুটা, যেমন তিনি গীতা থেকে অবলীলায় শ্লোক বলতে পারতেন। এমনকি নজরুল নিজেকে কেবলই 'মোসলমান' ভাবেন নাই। ভুয়া নাস্তিকতা আর ইসলামের নামে ভুয়া 'ধর্ম'চর্চার বিরুদ্ধেই ছিল তাঁর বিদ্রোহী ও বৈপ্লবিক মানবতাবাদী অবস্থান। যেমন তাঁর অবস্থান ছিল--বলাই বাহুল্য--পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, এক অর্থে বর্ণবাদ এবং পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধেও। মউলানা ভাসানী--নজরুলের সঙ্গে তাঁর একধরনের আত্মার সম্পর্কই ছিল বটে--এই কথাটা বলেছিলেন এক সময়ঃ "পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, রাষ্ট্র এবং শ্রেণির প্রশ্ন উহ্য রাখিয়া যাহারা দেশ ও দুনিয়ার জুলুম ও অবিচারের কথা বলিয়া চোখের পানি ফেলেন আর কাতর হন, তাহাদের আপাতদৃষ্টিতে দরদী মনে হইলেও তাহারা আসলে জুলুম আর অবিচারের পক্ষেই অবস্থান নেন।" নজরুলের কাজের সমগ্র বিবেচনায় রাখলে ভাসানীর ওই কথাটা নজরুলেরও হতে পারে। আর যারা ভাসানীর তোলা ওইসব প্রশ্নকে গায়েব করে নজরুলের কাজের রাজনৈতিক বিবেচনায় বসেন, তারা আসলেই একই সঙ্গে নজরুলের প্রতি এবং শোষিত মানুষের প্রতি অবিচারই করেন।
পঞ্চমত, নজরুলের সঙ্গে তৃতীয় বিশ্বের--এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার--একদল লড়াকু এবং বিল্পবী কবির মতাদর্শিক, রাজনৈতিক এবং এমনকি নান্দনিক মিল লক্ষ্য না করে উপায় নাই। বিশেষ করে বলতে হবে ক্যারিবীয় কবি এমে সেজায়ার, তুর্কী কবি নাজিম হিকমত, লাতিন আমেরিকার কবি রোকে ডালটন ও ওতো রেনে কাস্তিয়ো, কোরিয়ার কবি কিম চি হা, উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ এবং এমনকি ফিলিস্তিনি কবি মাহমুদ দারবিশ-এর কথা। এই ফর্দটা মোটেই সম্পূর্ণ না। আরও আছেন। তবে এঁদের সকলের আগেই এঁদেরকেই যেন নজরুল প্রতিনিধিত্ব করেছেন একজন বিপ্লবী এবং উপনিবেশবাদবিরোধী কবি হিসাবে। তৃতীয় বিশ্বের ওইসব কবির আগেই ইতিহাসের লড়াকু ময়দানে নজরুল উপনিবেশবাদের শৃঙ্খল থেকে একেবারে পূর্ণ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আমার প্রিয় লেখক, বন্ধু এবং কমরেড--আফ্রিকার অন্যতম ঔপন্যাসিক-নাট্যকার-তাত্ত্বিক--নগুগি ওয়া থিওঙ্গো'র সঙ্গে নজরুল নিয়ে বেশ কথা হয়েছিল। আর নজরুলকে নিয়ে আমার কথা শোনার পর তিনি নির্দ্বিধায় বলে উঠেছিলেন, "কমরেড! নজরুল আমার প্রাণের কবি, এমনকি আমাদের আফ্রিকারও কবি।"
ষষ্ঠত, না বলে পারছি না যে, তুলনামূলক সাহিত্য আমার কাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, যদিও জানি যে, এখনও ওই এলাকা বেশ ইউরোপকেন্দ্রিক। আর বুদ্ধদেব বসু-সুধীন দত্তদের হাতে তুলনামূলক সাহিত্য ইউরোপকেন্দ্রিক-ই থেকেছে। আর সেই ইউরোপকেন্দ্রিকতা থেকেই নজরুলকে বায়রন, শেলি আর হুইটম্যানের সঙ্গে হরহামেশা তুলনা করার রেওয়াজ থেকে গেছে, যেন ইংরেজি-মার্কিন সাহিত্যের এইসব সাদা মহারথির সঙ্গে নজরুলের তুলনা না করলে নজরুল জাতে উঠেন না! হায়রে, ঔপনিবেশিক হীনম্মন্যতা! এই হীনম্মন্যতাকে নজরুল ঘৃণা করতেন। তবে তুলনামূলক সাহিত্যের বিউপনিবেশিকীকরণের স্বার্থেই নজরুলের সঙ্গে এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার কবিদের মিল খোঁজায় উপনিবেশবাদবিরোধী সাংস্কৃতিক রাজনীতির জন্য একেবারে নগদ লাভ আছে বলে মনে করি।
অবশ্যই নজরুলের কাজের আরও উপেক্ষিত দিক আছে, যেমন আছে তাঁর কাজের অসংখ্য দিক। আমি এইখানে তাঁর কাজের তুলনামূলকভাবে উপেক্ষিত মাত্র কয়েকটি দিকের নিচে মোটা দাগ দিয়েছি, তার বেশি কিছু নয়। তবে এইসব দিক এবং আরও কিছু দিক নিয়ে নজরুলের ওপর একটা পুরা বই লেখার খায়েশ আমার দীর্ঘ দিনের। গতবার ঢাকায় থাকতে কাজ শুরুও করেছিলাম। ধীরে হলেও কাজ এখনও চলছে।
প্রথমত, ভাবকে কোনোভাবেই ভারাক্রান্ত না করে কবিতায় কি করে রাজনৈতিক অর্থনীতির 'ট্রোপ' এবং পদ ও বর্গকে অনায়াসে জারি রাখা যায়, তা নজরুল দেখিয়ে গেছেন। "কুলিমজুর" এবং "কৃষাণের গান" কবিতায় এমনকি মার্কসের মূল্যতত্ত্বকে স্বচ্ছন্দে কবিতার ভাষায় অনুবাদ করেছেন নজরুল। তবে এইগুলো একমাত্র উদাহরণ না।
দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন অর্থে নজরুল 'জাতীয়' হলেও কম্যুনিস্ট বলেই (তত্ত্বের তত্ত্ববাগিশ 'কম্যুনিস্ট' না, সৃষ্টিশীলভাবেই কম্যুনিস্ট) তিনি দারুণভাবে আন্তর্জাতিকতাবাদী। আর তাঁর আন্তর্জাতিকতাবাদের একটা গুরুত্বপূর্ণ--একমাত্র না হলেও--অংশ হচ্ছে তাঁর বিশ্বসাহিত্যভাবনা। নজরুল ওই তথাকথিত 'বিশ্বসাহিত্য'-এর আধিপত্যবাদী 'বিশ্ব'কে আগেভাগেই ঠিকঠাক চিনে নিয়েছিলেন। এদিক থেকেও তিনি 'তিরিশ'-এর ওইসব 'পণ্ডিত'-কবির চেয়েও আলাদা। এমনকি তিনি যে পোলিশ লেখকদেরও মনোযোগ দিয়ে পড়তেন, তার প্রমাণ মেলে তাঁর লেখা "বর্তমান বিশ্ব সাহিত্য" প্রবন্ধে, যে-প্রবন্ধ বর্তমান সময়ের তাগিদেই আমাদের পুনর্পাঠ দাবি করে বলে আমি মনে করি।
তৃতীয়ত, আরবি-ফার্সি সাহিত্যে নজরুলের যে কেবল অসাধারণ দখল ছিল তাই না। তিনি একাধিক আরবি-ফার্সি ছন্দকে বিস্ময়করভাবে এবং অনায়াসে বাংলা কবিতায় ব্যবহার করেছেন। ছন্দগুলো হচ্ছে-- 'মোতাকারিব', 'মোতদারিক', 'হজয, 'রজয', 'মাশাকেল' ইত্যাদি। এভাবে তিনি বাংলা কবিতার ছন্দের ইতিহাসে নজিরছাড়া ঘটনা ঘটিয়ে গেছেন।
এছাড়া নজরুলের কবিতায় এবং গানে 'গজল' ফর্মের সৃষ্টিশীল ব্যবহার নিয়ে তেমন কাজ হয় নাই। এই প্রসঙ্গে এও বলা দরকার, নজরুল যে কেবল আরবি-ফার্সি কবিতার--বিশেষ করে হাফিজ এবং খৈয়াম-এর কবিতার--সেরা অনুবাদ করেছেন তাই না; তিনি এমনকি কুরআন থেকেও অনুবাদ করেছিলেন। তাঁর 'সুরা ফাতিহা' আর 'সুরা ইখলাস'-এর অনুবাদ একই সঙ্গে এতই বিশ্বস্ত এবং এতই সুন্দর যে, মনে হয় নামাজে দাঁড়িয়ে মূল আরবির বদলে তাঁর তর্জমায় সুরা পাঠ করলে নজরুলের ভাষায় "পরম সুন্দর" আল্লাহ বোধ হয় অখুশি হবেন না। আরেকটা কথাঃ কেউ কেউ হয়ত জানবেন যে, হজরত আলীর একটা বা দুটো সুফি কবিতাও নজরুল অনুবাদ করেছিলেন এক সময়।
চতুর্থত, এটাও ঠিক যে, নজরুল সংস্কৃত সাহিত্যও অধ্যয়ন করেছিলেন কিছুটা, যেমন তিনি গীতা থেকে অবলীলায় শ্লোক বলতে পারতেন। এমনকি নজরুল নিজেকে কেবলই 'মোসলমান' ভাবেন নাই। ভুয়া নাস্তিকতা আর ইসলামের নামে ভুয়া 'ধর্ম'চর্চার বিরুদ্ধেই ছিল তাঁর বিদ্রোহী ও বৈপ্লবিক মানবতাবাদী অবস্থান। যেমন তাঁর অবস্থান ছিল--বলাই বাহুল্য--পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, এক অর্থে বর্ণবাদ এবং পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধেও। মউলানা ভাসানী--নজরুলের সঙ্গে তাঁর একধরনের আত্মার সম্পর্কই ছিল বটে--এই কথাটা বলেছিলেন এক সময়ঃ "পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, রাষ্ট্র এবং শ্রেণির প্রশ্ন উহ্য রাখিয়া যাহারা দেশ ও দুনিয়ার জুলুম ও অবিচারের কথা বলিয়া চোখের পানি ফেলেন আর কাতর হন, তাহাদের আপাতদৃষ্টিতে দরদী মনে হইলেও তাহারা আসলে জুলুম আর অবিচারের পক্ষেই অবস্থান নেন।" নজরুলের কাজের সমগ্র বিবেচনায় রাখলে ভাসানীর ওই কথাটা নজরুলেরও হতে পারে। আর যারা ভাসানীর তোলা ওইসব প্রশ্নকে গায়েব করে নজরুলের কাজের রাজনৈতিক বিবেচনায় বসেন, তারা আসলেই একই সঙ্গে নজরুলের প্রতি এবং শোষিত মানুষের প্রতি অবিচারই করেন।
পঞ্চমত, নজরুলের সঙ্গে তৃতীয় বিশ্বের--এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার--একদল লড়াকু এবং বিল্পবী কবির মতাদর্শিক, রাজনৈতিক এবং এমনকি নান্দনিক মিল লক্ষ্য না করে উপায় নাই। বিশেষ করে বলতে হবে ক্যারিবীয় কবি এমে সেজায়ার, তুর্কী কবি নাজিম হিকমত, লাতিন আমেরিকার কবি রোকে ডালটন ও ওতো রেনে কাস্তিয়ো, কোরিয়ার কবি কিম চি হা, উর্দু কবি ফয়েজ আহমেদ ফয়েজ এবং এমনকি ফিলিস্তিনি কবি মাহমুদ দারবিশ-এর কথা। এই ফর্দটা মোটেই সম্পূর্ণ না। আরও আছেন। তবে এঁদের সকলের আগেই এঁদেরকেই যেন নজরুল প্রতিনিধিত্ব করেছেন একজন বিপ্লবী এবং উপনিবেশবাদবিরোধী কবি হিসাবে। তৃতীয় বিশ্বের ওইসব কবির আগেই ইতিহাসের লড়াকু ময়দানে নজরুল উপনিবেশবাদের শৃঙ্খল থেকে একেবারে পূর্ণ স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। আমার প্রিয় লেখক, বন্ধু এবং কমরেড--আফ্রিকার অন্যতম ঔপন্যাসিক-নাট্যকার-তাত্ত্বিক--নগুগি ওয়া থিওঙ্গো'র সঙ্গে নজরুল নিয়ে বেশ কথা হয়েছিল। আর নজরুলকে নিয়ে আমার কথা শোনার পর তিনি নির্দ্বিধায় বলে উঠেছিলেন, "কমরেড! নজরুল আমার প্রাণের কবি, এমনকি আমাদের আফ্রিকারও কবি।"
ষষ্ঠত, না বলে পারছি না যে, তুলনামূলক সাহিত্য আমার কাজের একটা গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, যদিও জানি যে, এখনও ওই এলাকা বেশ ইউরোপকেন্দ্রিক। আর বুদ্ধদেব বসু-সুধীন দত্তদের হাতে তুলনামূলক সাহিত্য ইউরোপকেন্দ্রিক-ই থেকেছে। আর সেই ইউরোপকেন্দ্রিকতা থেকেই নজরুলকে বায়রন, শেলি আর হুইটম্যানের সঙ্গে হরহামেশা তুলনা করার রেওয়াজ থেকে গেছে, যেন ইংরেজি-মার্কিন সাহিত্যের এইসব সাদা মহারথির সঙ্গে নজরুলের তুলনা না করলে নজরুল জাতে উঠেন না! হায়রে, ঔপনিবেশিক হীনম্মন্যতা! এই হীনম্মন্যতাকে নজরুল ঘৃণা করতেন। তবে তুলনামূলক সাহিত্যের বিউপনিবেশিকীকরণের স্বার্থেই নজরুলের সঙ্গে এশিয়া, আফ্রিকা এবং লাতিন আমেরিকার কবিদের মিল খোঁজায় উপনিবেশবাদবিরোধী সাংস্কৃতিক রাজনীতির জন্য একেবারে নগদ লাভ আছে বলে মনে করি।
অবশ্যই নজরুলের কাজের আরও উপেক্ষিত দিক আছে, যেমন আছে তাঁর কাজের অসংখ্য দিক। আমি এইখানে তাঁর কাজের তুলনামূলকভাবে উপেক্ষিত মাত্র কয়েকটি দিকের নিচে মোটা দাগ দিয়েছি, তার বেশি কিছু নয়। তবে এইসব দিক এবং আরও কিছু দিক নিয়ে নজরুলের ওপর একটা পুরা বই লেখার খায়েশ আমার দীর্ঘ দিনের। গতবার ঢাকায় থাকতে কাজ শুরুও করেছিলাম। ধীরে হলেও কাজ এখনও চলছে।
0 comments:
Note: Only a member of this blog may post a comment.