মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় ও “বাস্তবতাবাদী”র লেবেল || আজফার হোসেন
মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিছক “বাস্তবতাবাদী”র লেবেল এঁটে দিয়ে সনাতন মানিক-সমালোচনায় লেবেলের এক ধরনের পুলিশি জারি রেখেছেন কেউ কেউ।
এখানে মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বের কথা বলতে হয়। অবশ্যই বলতে হবে যে, মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বের দীর্ঘ ইতিহাসে অনেক পালাবদল ঘটে গেছে এবং তার সম্ভাবনাও সম্প্রসারিত হচ্ছে, যার সাক্ষী সাম্প্রতিক সাহিত্যতত্ত্বের কাজগুলো নিজেই।
কিন্তু আমাদের দেশে, অর্থাৎ বাংলাদেশে, মার্কসবাদের নামে নন্দনতত্ত্বের সীমিত ফর্মুলা-মাফিক চর্চা ভাঙা রেকর্ডের মতো বাজতে বাজতে এখন তা ফসিলে পরিণত হয়েছে। আর ওই মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বের দোহাই পেড়ে সোশ্যাল রিয়েলিজম বা সামাজিক বাস্তবতার গন্ধ শোঁকার প্রচলিত অভ্যাসে মানিকের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বারবারই। সেখানে ভাবটা এমন যে, মানিক গলির ধারের আল্পনা স্টুডিও’র বা “রিয়ালিজম” স্টুডিও’র ভাড়া-খাটা ক্যামেরাম্যান—শুধু ক্লিক করলেই হলো, অবিকল ছবিটা ঠিক তোলা হয়ে যাবে।
কিন্তু, না, কেবল ছবি তোলার কাজটা তিনি নেন নাই; তিনি ছবি নির্মাণ করেন, তাকে ভেঙে ও ছিঁড়ে ফেলেন; আবার যা লুকিয়ে থাকে, তারও ছবি তোলেন। আবার যার ছবি তোলেন, তাকে বদলিয়েও তুলে আনেন। মানিকের এই স্বভাবটা মরচে-পড়া সাহিত্যতত্ত্বের “প্রতিফলন মডেল”-এর সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না।
মানিকের “গল্প-লেখার গল্প”-এর সূত্র ধরে কেউ কেউ এও বলে থাকেন যে, মানিক সোভিয়েত সামাজিক বাস্তবতাবাদী উপন্যাস ও গল্প পড়েছেন প্রচুর, একেবারে ছেলেবেলা থেকেই। তা পড়েছেন তো বটেই, তবে বাস্তবতা প্রতিফলনের কোনো ফর্মুলা রপ্ত করার জন্য নয়।
তাই নিছক “বাস্তবতাবাদী”র লেবেল এঁটে মানিককে চিহ্নিত করার অর্থ দাঁড়ায় তাঁর সৃজনশীল ও ভাঙনমুখো ভাষিক ও রাজনৈতিক শক্তিকে রীতিমতো হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করা।
বলা দরকার, মানিক বাস্তবতার কথা শুধু বলেনই না; না, বাস্তবতাকে শুধু ‘রেপ্রিজেন্ট’ করার বিশ্বস্ত দায়ভার কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য তিনি বোধ করি লেখেন নাই; বাস্তবতাকে বদলাবার দারুণ এক তাগিদ আর কল্পনাও কাজ করেছে তাঁর ভেতরে।
এখানে মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বের কথা বলতে হয়। অবশ্যই বলতে হবে যে, মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বের দীর্ঘ ইতিহাসে অনেক পালাবদল ঘটে গেছে এবং তার সম্ভাবনাও সম্প্রসারিত হচ্ছে, যার সাক্ষী সাম্প্রতিক সাহিত্যতত্ত্বের কাজগুলো নিজেই।
কিন্তু আমাদের দেশে, অর্থাৎ বাংলাদেশে, মার্কসবাদের নামে নন্দনতত্ত্বের সীমিত ফর্মুলা-মাফিক চর্চা ভাঙা রেকর্ডের মতো বাজতে বাজতে এখন তা ফসিলে পরিণত হয়েছে। আর ওই মার্কসবাদী নন্দনতত্ত্বের দোহাই পেড়ে সোশ্যাল রিয়েলিজম বা সামাজিক বাস্তবতার গন্ধ শোঁকার প্রচলিত অভ্যাসে মানিকের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে বারবারই। সেখানে ভাবটা এমন যে, মানিক গলির ধারের আল্পনা স্টুডিও’র বা “রিয়ালিজম” স্টুডিও’র ভাড়া-খাটা ক্যামেরাম্যান—শুধু ক্লিক করলেই হলো, অবিকল ছবিটা ঠিক তোলা হয়ে যাবে।
কিন্তু, না, কেবল ছবি তোলার কাজটা তিনি নেন নাই; তিনি ছবি নির্মাণ করেন, তাকে ভেঙে ও ছিঁড়ে ফেলেন; আবার যা লুকিয়ে থাকে, তারও ছবি তোলেন। আবার যার ছবি তোলেন, তাকে বদলিয়েও তুলে আনেন। মানিকের এই স্বভাবটা মরচে-পড়া সাহিত্যতত্ত্বের “প্রতিফলন মডেল”-এর সঙ্গে একেবারেই খাপ খায় না।
মানিকের “গল্প-লেখার গল্প”-এর সূত্র ধরে কেউ কেউ এও বলে থাকেন যে, মানিক সোভিয়েত সামাজিক বাস্তবতাবাদী উপন্যাস ও গল্প পড়েছেন প্রচুর, একেবারে ছেলেবেলা থেকেই। তা পড়েছেন তো বটেই, তবে বাস্তবতা প্রতিফলনের কোনো ফর্মুলা রপ্ত করার জন্য নয়।
তাই নিছক “বাস্তবতাবাদী”র লেবেল এঁটে মানিককে চিহ্নিত করার অর্থ দাঁড়ায় তাঁর সৃজনশীল ও ভাঙনমুখো ভাষিক ও রাজনৈতিক শক্তিকে রীতিমতো হাতকড়া পরিয়ে গ্রেফতার করা।
বলা দরকার, মানিক বাস্তবতার কথা শুধু বলেনই না; না, বাস্তবতাকে শুধু ‘রেপ্রিজেন্ট’ করার বিশ্বস্ত দায়ভার কাঁধে নিয়ে এগিয়ে যাবার জন্য তিনি বোধ করি লেখেন নাই; বাস্তবতাকে বদলাবার দারুণ এক তাগিদ আর কল্পনাও কাজ করেছে তাঁর ভেতরে।
0 comments:
Note: Only a member of this blog may post a comment.