প্রতীকী পুঁজি ও উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্ব || আজফার হোসেন
প্রতীকী পুঁজি ও উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্ব
ফরাসি চিন্তক এবং জ্ঞান-সমাজতাত্ত্বিক পিয়ের বুরদো মেলা আগেই তাঁর সাড়া-জাগানো বই _দ্য ফিল্ড অফ কালচারাল প্রোডাকশান_-এ 'সিম্বলিক ক্যাপিটাল' বা প্রতীকী পুঁজির ধারণাকে সামনে এনেছিলেন। ধারনাটা বুরদো'র পরের দিকে লেখা আরেক বই _ডিসটিঙ্কশান_-এ আরও ব্যাপ্ত এবং জোরদার হয়। আর এই ধারণাটার বিভিন্ন ব্যাখ্যাও এর মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। তবে প্রতীকী পুঁজির একটা অর্থকে বুরদোর অনুসরণেই এভাবে দেখা যায়ঃ বিশেষ বিশেষ জ্ঞান বা ডিসকোর্স বা অনুশীলন তার সম্মান, প্রভাব এবং প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতার ও ক্ষমতার কারণেই এক ধরণের পুঁজির চেহারা নিতে পারে, যে পুঁজি তার বিনিয়োগের ভেতর দিয়েই আরও সম্মান, প্রভাব ও প্রতিপত্তিকে হাতিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। বুরদো'র এই 'প্রতীকী পুঁজি' হিসাবেই উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বকে অবশ্যই বিবেচনা করা চলে। বিশেষ করে মানবিক বিদ্যার বিভিন্ন শাখায় এই প্রতীকী পুঁজি উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ায় ও জুড়ে বসে।
এ কারণেই আমরা আগেই লক্ষ্য করেছি উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠের সে-কি ধুম! যেমন এর মধ্যেই আমরা পেয়েছি হোমারের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ, বাইবেলের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ, দান্তের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ, জয়েসের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠতো আছেই, এমনকি আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গিনীদের কান- ও নাভি-ফোঁড়ানোর উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ। হায়রে পাঠ! আর প্রথমত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতা এবং প্রতীকী পুঁজি হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার পর গোলকায়নের লজিক অনুসরণেই উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্ব ছুটে চলেছিলো (এবং এখনও চলে) পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার প্রান্তস্থ অঞ্চলের দিকে বা এশিয়া-আফ্রিকা-লাতিন আমেরিকার দিকে।
হ্যাঁ, পুঁজি, পণ্য ও মানুষের মতোই তত্ত্বও পৃথিবী ভ্রমণ করে বটে। কিন্তু সবাই একই উদ্দেশ্যে এবং একইভাবে পৃথিবী ভ্রমণ করে না। তবে উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বের দুনিয়া সফরের একটা বিশেষ ফলাফল এই যে, তৃতীয় বিশ্বের একদল তরুণ নতুন কিছু পাওয়ার খায়েশে এই তত্ত্বকে প্রায় অন্ধভাবে গ্রহণ করেছেন, মাঝে মাঝে এমনকি বৈপ্লবিক মার্কসবাদের ঘুমপাড়ানিয়া বিকল্প হিসাবেও—যে কথাটা বেশ জোরেশোরে বলেছেন ফিলিপিনো সংস্কৃতিতাত্ত্বিক ই, স্যান উয়ান [E. San Juan] তাঁর বই _বিয়ন্ড পোস্ট-কলোনিয়াল থিয়োরি_-তে। বইটা কেউ যদি বাংলায় অনুবাদ করতো!
ফরাসি চিন্তক এবং জ্ঞান-সমাজতাত্ত্বিক পিয়ের বুরদো মেলা আগেই তাঁর সাড়া-জাগানো বই _দ্য ফিল্ড অফ কালচারাল প্রোডাকশান_-এ 'সিম্বলিক ক্যাপিটাল' বা প্রতীকী পুঁজির ধারণাকে সামনে এনেছিলেন। ধারনাটা বুরদো'র পরের দিকে লেখা আরেক বই _ডিসটিঙ্কশান_-এ আরও ব্যাপ্ত এবং জোরদার হয়। আর এই ধারণাটার বিভিন্ন ব্যাখ্যাও এর মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা চলেছে। তবে প্রতীকী পুঁজির একটা অর্থকে বুরদোর অনুসরণেই এভাবে দেখা যায়ঃ বিশেষ বিশেষ জ্ঞান বা ডিসকোর্স বা অনুশীলন তার সম্মান, প্রভাব এবং প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতার ও ক্ষমতার কারণেই এক ধরণের পুঁজির চেহারা নিতে পারে, যে পুঁজি তার বিনিয়োগের ভেতর দিয়েই আরও সম্মান, প্রভাব ও প্রতিপত্তিকে হাতিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। বুরদো'র এই 'প্রতীকী পুঁজি' হিসাবেই উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বকে অবশ্যই বিবেচনা করা চলে। বিশেষ করে মানবিক বিদ্যার বিভিন্ন শাখায় এই প্রতীকী পুঁজি উড়ে উড়ে ঘুরে বেড়ায় ও জুড়ে বসে।
এ কারণেই আমরা আগেই লক্ষ্য করেছি উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠের সে-কি ধুম! যেমন এর মধ্যেই আমরা পেয়েছি হোমারের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ, বাইবেলের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ, দান্তের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ, জয়েসের উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠতো আছেই, এমনকি আছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্বেতাঙ্গিনীদের কান- ও নাভি-ফোঁড়ানোর উত্তর-ঔপনিবেশিক পাঠ। হায়রে পাঠ! আর প্রথমত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রাতিষ্ঠানিক বৈধতা এবং প্রতীকী পুঁজি হিসাবে গ্রহণযোগ্যতা পাওয়ার পর গোলকায়নের লজিক অনুসরণেই উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্ব ছুটে চলেছিলো (এবং এখনও চলে) পুঁজিবাদী বিশ্বব্যবস্থার প্রান্তস্থ অঞ্চলের দিকে বা এশিয়া-আফ্রিকা-লাতিন আমেরিকার দিকে।
হ্যাঁ, পুঁজি, পণ্য ও মানুষের মতোই তত্ত্বও পৃথিবী ভ্রমণ করে বটে। কিন্তু সবাই একই উদ্দেশ্যে এবং একইভাবে পৃথিবী ভ্রমণ করে না। তবে উত্তর-ঔপনিবেশিক তত্ত্বের দুনিয়া সফরের একটা বিশেষ ফলাফল এই যে, তৃতীয় বিশ্বের একদল তরুণ নতুন কিছু পাওয়ার খায়েশে এই তত্ত্বকে প্রায় অন্ধভাবে গ্রহণ করেছেন, মাঝে মাঝে এমনকি বৈপ্লবিক মার্কসবাদের ঘুমপাড়ানিয়া বিকল্প হিসাবেও—যে কথাটা বেশ জোরেশোরে বলেছেন ফিলিপিনো সংস্কৃতিতাত্ত্বিক ই, স্যান উয়ান [E. San Juan] তাঁর বই _বিয়ন্ড পোস্ট-কলোনিয়াল থিয়োরি_-তে। বইটা কেউ যদি বাংলায় অনুবাদ করতো!
0 comments:
Note: Only a member of this blog may post a comment.